স্বদেশ ডেস্ক: বিএনপির জাতীয় বৃহত্তর ঐক্য গড়ার ডাকে বাম দলগুলো সাড়া দিচ্ছে না। মতাদর্শগত পার্থক্যের জন্য তারা বিএনপির সাথে বৃহত্তর ঐক্য গড়তে আগ্রহী নয়। তারা আলাদাভাবে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে থাকবে। সে ক্ষেত্রে ন্যূনতম ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ বা যুগপথ আন্দোলন হতে পারে। বাম গণতান্ত্রিক জোটের শরিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। বাম নেতারা বলছেন, আমরা চাই বিরোধী দলগুলো মিলে জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে একটি বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে। রজপথের আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বৃহত্তর ঐক্যের সমীকরণ তৈরি হবে। রাজপথের বাইরে শুধু কাগজে-কলমের বৃহত্তর ঐক্যে তারা বিশ্বাসী নয়।
বর্তমান সরকার সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করার পর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ডানপন্থি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে ১৯ দলীয় জোট গঠিত হয়। ২০১১ সালের ৩০ জুন এ জোট গঠনের পর এটি পরে সম্প্রসারিত হয়ে ২০ দলীয় জোটে পরিণত হয়। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করা হলে জোটের হাল ধরেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপর সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মির্জা ফখরুলের তৎপরতায় ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এতে ২০ দলীয় জোট অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। বিশেষ করে জামায়াতকে নিষ্ক্রিয় রেখেই বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সক্রিয় করে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হয়। নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জনমনে বেশ আশার সৃষ্টি করে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নেতৃত্বে দুর্বলতার কারণে ঐক্যফ্রন্ট জনপ্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। রাজনৈতিক কটকৌশলে চরমভাবে পরাজিত হয়েছে ঐক্যফ্রন্ট।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর ২০ দলীয় জোট এবং ঐক্যফ্রন্টে টানাপড়েন দেখা দেয়। সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে ২০ দলীয় জোট থেকে আন্দালিব রহমান পার্থ বেরিয়ে যান। অন্য দিকে কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ নামে আলাদা জোট গঠন করেছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। এর মধ্যে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী গত ৭ জুলাই ঐক্যফ্রন্ট ছেড়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ অবস্থায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গঠনের বিষয়টি বড় প্রশ্নের মুখে পড়েছে।